ঢাকায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও দলীয় নেতা সেরনিয়বাত সাদিক আব্দুল্লাহ ও তার  ছোট ভাই বরিশাল জেলা আ’লীগের সদস্য সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ চমকই দেখালেন। প্রায় ১০ হাজার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঢাকায় উপস্থিত হয়ে সম্মেলনস্থল অভিমুখে রাজপথ কাপিয়ে তোলেন। শেখ হাসিনা ভয় নাই, সাদিক ভাই  আশিক ভাই রাজপথ ছাড়ে নাই, এরুপ শ্লোগানে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত পৌঁছানের পূর্বে গগণবিদারী আওয়াজ ও কর্মী-সমর্থকদের ঢল সবার নজর কেড়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়- শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় ৫টি লঞ্চযোগে এই বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী সদরঘাট নৌবন্দরে পৌছানোর পর একত্রিত হয়ে মিছিলে শ্লোগান তোলে। প্রায় দুই ঘণ্টা সময় পায়ে হেঁটে দীর্ঘ এই মিছিলের বহর সম্মেলনস্থ সোহরওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছায়। মিছিলের অগ্রভাগে থাকা পায়জামা পাঞ্জাবী সহকারে মুজিবকোর্ট গায়ে সাদিক আব্দুল্লাহ’র নেতৃত্ব দেওয়ার ঢংয়েও ছিল ব্যতিক্রমতা। কখনও নিজে নেচে-দুলে আবার কখনও শ্লোগানের সুর তুলে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উম্মাদনা জাগ্রত করতে দেখা গেছে।

বরিশাল শহর থেকে এই বিপুল সংখ্যক লোকের সমন্বয় বিশালকায় মিছিল সম্মেলনস্থলে পৌঁছা মাত্র সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাদের কড়তালির মাধ্যমে অভিবাদন জানান। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সাদিক আব্দুল্লাহ মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার ভঙ্গিমা এবং তার পেছনে কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহের স্রোতকে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার সাথে তুলনা করতে শোনা গেছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা মফস্বল শহর থেকে একত্রে এত নেতাকর্মী ঢাকামুখী হওয়ার দৃশ্য দেখে পুলকিত এবং ভুয়াসী প্রসংশা করেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা মুঠোফোনে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন- মেয়র সাদিকের নেতৃত্বে এই বিশালকায় মিছিল শুধু জনসভাস্থল নয়, ঢাকার রাজপথের পথচারীদের মাঝেও আলোচনার সৃষ্টি করেছে। কত সংখ্যক লোক এই বহরে অংশ নিয়েছিল তা কেউ সঠিকভাবে নিরুপন করতে না পারলেও ১০ হাজারের কম হবে না বলে ধারণা করছে। ২০ ও ২১ ডিসেম্বর দুইদিন ব্যাপি জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে সাদিক আব্দুল্লাহ ও বরিশাল জেলা আ’লীগের সদস্য সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ এমনটিই চেয়েছিলেন ঢাকার রাজপথে নিজেকে উপস্থাপনে। সফলও হলেন গত এক সপ্তাহকালের প্রস্তুতির। এর আগে অনুষ্ঠিত বরিশাল মহানগরের সম্মেলনে নেতাকর্মী সমাগমে সফলতায় তার কারিশমা বা পরিকল্পার আলোকেই এই প্রস্তুতি নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়- অত্যান্ত সতর্কভাবে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের চিহ্নিত করে পরিচয়পত্র দিয়ে ঢাকা অভিমুখে তার সফর সঙ্গী করেন। বৃহস্পতিবার রাতে ৫টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয় বরিশাল নৌবন্দরের টার্মিনালে। জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা একত্রিত হয়ে গভীর রাতে লঞ্চে চেপে ওঠেন। সাথে মহিলা নেত্রী ও কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যাও কম নয়। রাত ১২ টার পর বরিশাল নৌবন্দরে ভিন্ন এক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।

আ’লীগের নেতাকর্মীদের অভায়ারণ্যে এক উৎসবমুখর পরিবেশ পরিলক্ষিত হয়। এরপর মুহূমুহূ আতোশবাজি নৌবন্দরের আকাশ নানা রঙে আলোকিত করার পাশাপাশি সাদিক আব্দুল্লাহ ও বরিশাল জেলা আ’লীগের সদস্য সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ অনুসারীদের নিয়ে ঢাকা অভিমুখে বরিশাল ছাড়ছেন তার প্রতিধ্বনি শোনা যায়। সফরে সম্পৃক্ত বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী নিশ্চিত করেন- সুশৃঙ্খল পরিবেশে এবং রাতে খাবার পরিবেশন সর্বশেষ সকালের নাস্তা পর দুপুর ঢাকা সদরঘাটে লঞ্চগুলো অবস্থান নেয়। সেখানে মধ্যহ্নভোজের পর কিছুটা বিরতি নিয়ে সাদিক আব্দুল্লাহ নেতৃত্ব দিয়ে এই বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী নিয়ে যান। এই সফরকে অনেকে শো-ডাউন হিসেবে দেখছেন। সেক্ষেত্রে সাদিক আব্দুল্লাহ শতভাগ সফল হয়ে ঢাকায়ও চমক সৃষ্টি করলেন, দৃষ্টি কাড়লেন সমাবেশস্থলে আসা দেশজুড়ে থাকা দলীয় নেতাকর্মীদের।

Share.

Leave A Reply

Exit mobile version