বরিশাল সদর উপজেলার আওতাধীন লাহারহাট ঘাট থেকে ভোলা ভেদুরিয়া ও মেহেন্দিগঞ্জ রুটে যাত্রী পরিবহন করে থাকে ৭০থেকে ৮০ টা স্পিডবোট।মহামানী করোনাভাইরাস এর দ্বিতীয় ধাপে সরকারের কঠোর লকডাউন ঘোষণা প্রকাশ করেন গত ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে নৌপথে যাত্রী পারাপারেও তবে বরিশালের এসব রুটে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ফের যাত্রী পরিবহন শুরু করে স্পিডবোটগুলো। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই
নেই কোনো লাইট জ্যাকেট ১০ থেকে ১৪ জন যাত্রী গাদাগাদি করে তোলা হচ্ছে স্পিডবোটগুলোতে ভাড়াও নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ।স্পিডবোটের কয়েকজন চালক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, বরিশাল বন্দর থানা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রতিদিনই টাকা নেয় তাদের কাছ থেকে। জড়িত রয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারাও। তাদের ম্যানেজ করেই চালাতে হয় স্পিডবোট।
তারা আরও জানান, বন্দর থানা ও নৌপুলিশকে ম্যানেজ করেন চলছে স্পিডবোট।স্পিডবোট মালিক সমিতির সঙ্গেও যুক্ত স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা।স্পিডবোট চালক সুজন ও রুবেল বলেন,লাহারহাট থেকে ভোলায় নরমালে যাত্রী ভাড়া ১৫০ টাকা হইলেও লকডাউনের মধ্যে অনেক কিছু ম্যানেজ করে চালাইতে হয়।
তাই ভাড়া এখন ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।পূর্বে ভাড়া দিতাম ১৫০ টাকা। আর বাকী ৩৫০ টাকা যায় মালিক সমিতির কাছে ।তাড়া বন্দর থানার কিছু অসৎ পুলিশ সদস্যদের ম্যানেজ করে চালায় স্পিডবোট, তাদের নামে চলে পুলিশের ডিউটি।সুমন নামে আরেক চালক জানান, লাহারহাট ঘাট থেকে ভোলা ভেদুরিয়া মেহেন্দিগঞ্জ ছাড়াও চরবাড়িয়া ও চরমোনাইসহ বেশ কয়েকটা রুটে অবৈধভাবে স্পিডবোট চালানোয় যুক্ত স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এজন্য নির্দিষ্ট কোন ঘাট নেই যেখানে ঝামেলা হয়, সেখান থেকে সরিয়ে আরেক জায়গায় ঘাট দেয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আগের চাইতে ভাড়া এখন ডাবল রোগী নিয়ে আসলেও ডাবল ভাড়া দিতে হয় । এক্সট্রা যে টাকা নেই আমরা, তা মোদের দিতে হয় মালিক সমিতিরে। তারা আবার টাকা ভাগ করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ওই বিআইডব্লিউটিএর অফিসারদের দেয়া লাগে।
স্থানীয়রা বলেন সড়ক পথ বেহাল দশার কারণে প্রসাশনের লোক সময় মত পৌঁছাতে পারেন না তাই প্রশাসনের চোঁখ ফাকি দিয়ে বেপরোয়া ভাবে স্পিড বোট চলাচল করেন।
তবে অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার। তিনি বলেন,আমি ও আমাদের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এভাবে কোনো ঘটনা আমাদের চোখে পড়েনি, যদি কেউ সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে স্পিডবোট জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চলাচল করে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও যদি স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে তাকে ও আইনের আওতায় আনা হবে ও বন্দর থানার পুলিশকে কেউ ম্যানেজ করে না। আমাদের নজরদারি রয়েছে। এ বিষয়ে ঘাট ইজারাদার মহসীন খানের মুঠোফোনে কল দিলে বলেন আমি ঘাটে নেই আপনি পরে এসে দেখা করবেন আপনাদের চায়ের দাওয়াত রইলো।
এব্যাপারে বরিশাল জেলা স্পিডবোট মালিক-চালক সমবায় সমিতির লাইন ইনচার্জ মোঃ তারেক শাহ জানান , সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ডিসিঘাট থেকে শুধু রোগী নিয়ে স্পিডবোট চলাচল করার অনুমতি দিয়ে থাকি । নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড রোগীর কাগজপত্র দেখেই স্পিডবোট ছাড়ার অনুমতি দিলে আমাদের বোট চলাচল করে। পুলিশ বা কাউকে তারা টাকা দেন না। কিন্তু লাহারহাট থেকে স্পিডবোট ছেড়ে ভোলা বা মেহেন্দিগঞ্জে যায়। সে বিষয়ে প্রসাশনের নজরদারি বাড়ানোর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এবিষয়ে বিআইডব্লিউ টি এ,এর যুগ্ম সচিব (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান কে মুঠোফোনে কল দিলে জানান ,আমরা এ ব্যপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘাট বাতিল করা থেকে শুরু করে আইনের সব ধরণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড (দক্ষিণ) জোন বিসিজি স্টেশন এর কন্টিজেন্ট কমান্ডার বরিশালের মো: সাহ জামাল,বলেন আমাদের আওতাধীন এলাকায় সকল ধরনের নৌ যাত্রীবাহী পরিবহণ লঞ্চ স্পিডবোট খেয়া, বন্ধ করেছি শুধুমাত্র জরুরী রুগী ছাড়া কোনো ধরনের যাত্রী পারাপার করতে পারবেন না , বরিশালে দুইটি জাহাজ ও রসুলপুরের সিসিএমসি (২৪) ঘণ্টা নদীতে ডিউটিতে আছে,যদি কেউ সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে স্পিডবোট জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চলাচল করে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।