ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে চাকরি হারালেন রাজধানীর পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফ হোসেন মল্লিক। মাদক সেবনের দায়ে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সোমবার (৪ জনুয়ারি) তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়। মঙ্গলবার দিনভর এটা নিয়ে পল্লবী থানায় বেশ আলোচনা ছিল। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত সহস্রাধিক সদস্যের ডোপ টেস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে পল্লবী থানার এসআই আরিফ হোসেন মল্লিকও রয়েছেন। ডিএমপির সদর দপ্তরের তালিকা অনুযায়ী, এসআই আরিফের বিরুদ্ধে হেরোইন সেবনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসআই আরিফ এর ডোপ টেষ্টের রিপোর্ট দেখানো হয় তার শরীরে অধিক পরিমানে হেরোইনের নমুনা পাওয়া গেছে, এটা দেখে তার মনে সন্দেহের জন্ম নেয় এবং সে নিজে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডোপ টেষ্ট করায়,সেখানে রিপোর্টে আসে তার শরীরে কোন প্রকার মাদকের আলামত নেই, এটা দেখার পর সে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ওই রিপোর্টের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ করে ।
এসআই আরিফ হোসেন কে পুলিশ কতৃপক্ষ আবার ডোপ টেষ্ট করানোর জন্য তলব করে এবং সে আবার নমুনা দেয় কিছু দিন পরে ওই ডাঃ আবার রিপোর্ট প্রদান করে তার শরীরে কোন প্রকার মাদকদ্রব্যের নমুনা নেই, মানে রিপোর্ট নেগেটিভ। এ বিষয়ে এসআই আরিফ হোসেনের বক্তব্য নিয়ে পুলিশের এই ডোপ টেষ্ট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । বরখাস্ত এসআই আরিফ হোসেন জানান, তিনি অধুমপায়ী, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পুর্ন মনগড়া বলে জানায়,সে দাবি করে তার বিরুদ্ধে এ যাবত কোন প্রকার অভিযোগ কেউ দেখাতে পারবে না।এটা একমাত্র ডিপার্টমেন্টের ব্যাপার কেন তাকে ডোপ টেষ্টের নামে মিথ্যে কলঙ্ক দেওয়া হয়েছে।তিনি বলে যদি কোন সাংবাদিক বা গোয়েন্দা সংস্থা কোনদিন চাকুরীর আগে বা চাকুরীরত অবস্থায় একটা সিগারেট খাওয়ার প্রমান দেখাতে পারে তাহলে ও তার মনে কোন প্রকার দুঃখ থাকবে না চাকুরী থেকে বরখাস্ত নিয়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশ সদস্য জানায় এখন ডোপ টেষ্ট রমরমা বানিজ্যে পরিনিত হয়েছে সিনিয়র অফিসারদের মন যোগাতে না পারলেই নাম ঢুকানো হয় ডোপ টেষ্টে , সে জরিতো থাক বা না থাক রিপোর্ট পজেটিভ দিয়ে দেয়। আর যদি রিপোর্ট দেবার আগে মোটা অংকের টাকা দিতে পারে তাহলে মাদক সেবন করলেও রিপোর্ট নেগেটিভ দেয় এমন অভিযোগ করে কয়েক জন পুলিশ সদস্য। তাই ডোপ টেষ্ট নিয়ে চলছে পুলিশের মধ্যে না না বিতর্ক। কেউ কেউ দাবি করে সিনিয়রদের ডোপ টেষ্ট করানো হলে শতকরা ৯৫ জনের রিপোর্ট পজেটিভ আসবে তারা আরো দাবি করে, কনস্টেবল, এএসআই, এসআই পদে যারা আছে তাদের প্রতি জুলুম করা হচ্ছে প্রকৃত মাদকাসক্ত যাঁরা তাদের সনাক্ত না করে নিরীহ পুলিশ সদস্যের উপর দায় চাপিয়ে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করে দেশের মানুষের কাছে লোক দেখানো নাটক সাজাচ্ছে।
ডিএমপির ডেপুটি কমিশনার (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন এসব অভিযোগ অমুলক বলে এই প্রতিবেদককে জানান, প্রত্যেক ডিভিশনের প্রধানরা প্রথমে নজরদারির মাধ্যমে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করেন। এর পর রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদকাসক্ত কিনা তা চিহ্নিত করা হয়। পজিটিভ হলে বিভাগীয় মামলা করা হয়। বিভাগীয় মামলা পর্যায়েই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তদন্ত শেষে বরখাস্ত করা হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া , এখানে কোন পুলিশ সদস্যকে ব্যাক্তিগত দায় চাপিয়ে দেবার কোন সুযোগ নেই । পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মোঃ সোহেল রানা বলেছেন, পুলিশ সদর দফতরের কথা হলো, পুলিশের কোন সদস্য মাদক গ্রহণ করবে না। মাদকের ব্যবসায় জড়াবে না। তাদের কোন মাদক সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। ডিএমপির কার্যক্রম দৃশ্যমান হচ্ছে। সারাদেশে পুলিশের ইউনিটগুলোর জন্যও একই নির্দেশনা। তাদেরও এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। দেশের বিভিন্নস্থানের কোন কোন ইউনিট এরই মধ্যে ব্যবস্থাও নিয়েছে এবং ডোপ টেস্ট প্রক্রিয়া প্রসারিত হচ্ছে।