উজিরপুরের সাতলায় ধর্ষণ মামলার বাদীকে হুমকীর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
বরিশালের উজিরপুরে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার বাদীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকীর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাদীর পরিবার। বাদীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মামলাবাজ আখ্যায়িত করে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাদীর ছবি সম্বলিত পোষ্টার টানিয়ে তার সম্মান হানি অসামী পক্ষরা। হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে উজিরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাদীর পরিবার। গতকাল বিকেলে উপজেলার সাংবাদিকদের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হয়রানির শিকার ধর্ষণ চেষ্টা মামলার বাদী জুড়ান চন্দ্র সমদ্দারসহ শতাধিক স্থানীয় লোকজন। লিখিত বক্তব্যে জানা যায়, সাতলার ভরতসেন বটতলা সার্বজনীন কালি, দুর্গা, রাধাগোবিন্দ মন্দির কমিটির দীর্ঘদিন সভাপতি ছিলেন জুড়ান চন্দ্র সমদ্দার এবং সহ-সভাপতি ছিলেন বিধান চন্দ্র রায়। পরবর্তীতে বিধান সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
কিন্তু ওই মন্দিরের নিকটবর্তী ১ একর ৬৪ শতাংশ ভ‚মি জলাশয় সরকারের ভিপি তালিকাভ‚ক্ত থাকায় গোপন ভাবে লীজ গ্রহন করেন তৎকালীন স্বর্গীয় জগদিশ সমদ্দার। এরই সূত্র ধরেই শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধ। মন্দিরের কিছু অংশ ওই জলাশয়ে থাকায় মন্দির কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ জমিই মন্দিরের নামে লীজ গ্রহন করার পক্ষে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে জগদিশ সমদ্দারসহ তার সন্তান সুশান্ত সমদ্দারসহ সকলকে অনুরোধ করলেও তারা এতে কর্ণপাত না করে মন্দিরকেই তাদের দখলে নিতে পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষ স্বপন সমদ্দার(মহুরী), নিবাস(মহুরী), সাবেক মেম্বর সভারঞ্জন, সুব্রত, প্রকাশ, সুশান্ত, ছোট জগদিশ, গনেশ, গৌরাঙ্গ বল্লভ গংরা। প্রতিপক্ষ স্বপন সমদ্দার মন্দির কমিটির সভাপতি জুড়ান চন্দ্র সমদ্দারের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করে এবং প্রকাশ সমদ্দার বাদী হয়ে কমিটির লোকদের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করে। ইতিপূর্বে তপন সমদ্দার বাদী হয়ে কমিটির লোকদের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছিল যা উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত ২ নভেম্বর জুড়ান চন্দ্র সমদ্দারের নাতনিকে গভীর রাতে তাদের বসতঘরের পাশে পুকুর পাড়ের একটি জঙ্গলে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক জুড়ান চন্দ্র সমদ্দার বাদী হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় রতন সমদ্দার, সঞ্জয় সমদ্দার, শ্যামল সমদ্দার, প্রশান্ত সমদ্দারকে আসামী করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকেই প্রতিপক্ষরা বাদীকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাকে মামলাবাজ আখ্যায়িত করে উজিরপুরের বিভিন্ন রাস্তাঘাটে মামলাবাজ জুড়ান আখ্যায়িত করে পোষ্টার টানিয়ে দেয়। ধর্ষণ মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। ধর্ষণ মামলার ব্যাপারে মামলার বাদী উজিরপুর মডেল থানার এস.আই কমল জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এদিকে জুড়ান চন্দ্র সমদ্দার তার বিরুদ্ধে পোষ্টার টানিয়ে অপপ্রচারের ব্যাপারে আদালতে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা যায়। মামলার আসামী ও অপপ্রচারকারীদের দ্রæত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্ত্রির দাবী জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন ভুক্তভোগীরা।