নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় আদালতে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে সাক্ষ্য দিলেন ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান। মৃত্যুর আগে বোন নুসরাত তাকে যে সব কথা বলেছিলেন, তা বর্ণনা করার সময় রায়হান বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে আদালতে। এ সময় আদালতে নিস্তব্ধতা নেমে আসে। রায়হান সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র।
সোমবার সকালে নুসরাত হত্যার ১৬ আসামিকে কোট হাজতে থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল কক্ষে আসামির কাঠগড়ায় উঠায় পুলিশ। শুরুতেই ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ রায়হানের সাক্ষ্য নেওয়ার আহবান জানান। রায়হান তার বোন নুসরাতের জাহান রাফির ওপর অধ্যক্ষ সিরাজের যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। এরপর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং তার বোনের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের সমর্থকদের মানববন্ধনের ঘটনা তুলে ধরে। নুসরাতের শরীরে আগুন দেওয়ার কয়েক দিন আগ থেকে সিরাজের সমর্থক শাহাদাত হোসেন শামীম, নূর উদ্দিন, মোহাম্মদ জোবায়ের, সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ অধ্যক্ষের নির্দেশে মাদ্রাসার কক্ষে গোপন বৈঠক করেন বলে জানায় রায়হান। নুসরাতের শরীরে কেরসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার কথাও উঠে আসে তার সাক্ষ্যে।
২ ঘণ্টা সাক্ষ্য দেয়ার পর আসামিপক্ষ রায়হানের জবানবন্দির উপর জেরা করেন। এ সময় সাক্ষীকে পৃথকভাবে জেরা করেন ১৬ আসামির আইনজীবীরা। পিপি হাফেজ আহাম্মদ জানান, সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে আদালত মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। আদালত এ দিন সাক্ষী জহিরুল ইসলাম ও বেলায়েত হোসেনকে হাজির রাখতে পিপি ও পুলিশকে নির্দেশ দেন। সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতকে গত মার্চে যৌন নির্যাতন করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা। এ ঘটনায় সোনাগাজী থানায় মামলা হলে পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে। ওই মামলা তুলে নিতে ৬ এপ্রিল নুসরাতের শরীরে অধ্যক্ষের সমর্থক দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। পাঁচ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে মারা যান তিনি। নুসরাত হত্যা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করে। গত ২০ জুন এ মামলার বিচার শুরু হয়। সোমবার পর্যন্ত ৯ কার্যদিবসে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলায় সাক্ষী ৯২ জন।