স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ আসন্ন ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষ্যে সড়কপথে নারীর টানে বাড়ি ফেরা দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের বাড়ি ফেরা খুব একটা সুখকর হচ্ছেনা। মহাসড়কে ছয় লেনে উন্নয়নের কাজ চলমান থাকায় বিড়ম্বনায় পরতে হচ্ছে যাত্রীদের। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দীর্ঘ অংশে পাশের এজিনের মাটি সরে যাওয়ায় রয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। মহাসড়কের ওপরই রয়েছে বেশ কয়েকটি হাট-বাজার। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়া অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম্য বন্ধে নেই কার্যকরী কোন ব্যবস্থা। এসব কারণে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঈদযাত্রা এবারও স্বস্তির হচ্ছেনা।
সরেজমিনে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক পথে যোগাযোগের জন্য ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঢাকার বাবুবাজার থেকে মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার মহাসড়ক দুই লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। মহাসড়কের কাজে বিপুলসংখ্যক গাড়ি মালামাল লোড-আনলোড করার সময় সিগন্যাল দিয়ে সাধারণ পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কের সেতু ও কালভার্টগুলো ভেঙে ডাইভারশন তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে যানজট লেগেই রয়েছে। ফলে দীর্ঘসময় পথেই ব্যয় করতে হয় দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের।
এরমধ্যে মহাসড়কের টেকেরহাট থেকে মোস্তফাপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করায় আগের চেয়ে অনেকটা উন্নতি হয়েছে। বড়ইতলা থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার অংশ ও মোস্তফাপুর থেকে বরিশালের ভুরঘাটা পর্যন্ত নয় কিলোমিটার অংশে আগেই সংস্কার হওয়ায় পরিস্থিতি সহনীয়। কিন্তু দুই লেনের সরু ও ব্যস্ততম এ মহাসড়কজুড়েই এজিনের পাশের মাটি সরে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি পুরো মহাসড়কজুড়ে রয়েছে অবৈধ যানবাহনের ছড়াছড়ি। এছাড়া মহাসড়কের মালিগ্রাম, বড়ইতলা, ভুরঘাটা, বার্থী, মাহিলাড়া, বাটাজোরসহ কয়েকটিস্থানে রয়েছে অস্থায়ী হাট ও বাজার।
ঢাকা-বরিশাল রুটের বেপারী পরিবহনের চালক শাহিন তালুকদার বলেন, মহাসড়কে ছয় লেনের কাজ চলমান থাকায় অনেকস্থানে ওয়ানওয়ে করে দেওয়া হয়েছে। এতে ওইসব অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। প্রতিনিয়ত মহাসড়কের কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন গাড়ি মালামাল লোড-আনলোড করায় গাড়ির যানজট লেগে রয়েছে। ঈদের সময় উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখা ও অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্বে রাখা প্রয়োজন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, ঈদের সময় মহাসড়কে যানবাহনের ভয়াবহ চাঁপ সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের কয়েকস্থানে অস্থায়ী হাট ও বাজার বসে। এতে গাড়ি চালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।
খুলনা-বরিশাল রুটের অপর চালক কালু ঘরামী জানান, পুরো মহাসড়কজুড়ে পরিবহনের সাথে পাল্লাদিয়ে চলছে অবৈধ নসিমন, করিমন, থ্রী-হুইলার মাহিন্দ্রা ও ঈজিবাই। অন্তত ঈদের কয়েকদিন এগুলো মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করতে প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
গৌরনদী হাইওয়ে থানার ওসি শেখ মোঃ আতিয়ার রহমান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কে গাড়ির চাঁপ বেড়ে গেছে। তাই তার অধীনস্থ মহাসড়কের কোথাও যেন যানজটের সৃষ্টি না হয় সেজন্য মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন প্রবেশেও পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বরিশালেল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, আসন্ন ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে মহাসড়কগুলো নিয়ে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। ঈদের কয়েকদিন মহাসড়কের উন্নয়ন কার্মকান্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরো মহাসড়কে যাত্রী নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমন্ময় করে দায়িত্ব পালন করবেন। কোথাও কোনো অব্যবস্থাপনা দেখা গেলে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।