বরিশাল শহরে থেকে সুদুর বাকেরগঞ্জের পল্লীতে গিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বাসদ নেত্রী মনীষা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। তিনি ভাড়াটিয়া মাস্তান নিয়ে শ্যামপুরের ১২ নম্বর ইউনিয়নের রঙ্গশ্রীর পল্লীতে প্রবেশ করে রিয়াজ খান নামের এক যুবকের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এবং ক্যাডার বাহিনী নিয়ে যুবককে পিটিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত করাসহ স্থানীয় শংকর চক্রবর্তীর পূর্বপুরুষদের নামের থাকা জমির কাজগপত্র ছিড়ে ফেলেছেন। গতকাল শনিবার (১৯ জুন) বিকেল ৩টার এই ঘটনায় মৃত গৌরঙ্গ চক্রবর্তীর ছেলে শিক্ষক শংকর চক্রবর্তী বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশে একটি অভিযোগ করেছেন। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন অভিযোগটি হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগসমূহ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিন্তু বরিশাল জেলা বাসদের সদস্য সচিব মনীষা চক্রবর্তী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, রঙ্গশ্রীর শ্যামপুর তিনি ওয়ারিশসূত্রে জমির মালিক হলেও সেই জমি তার চাচাতো ভাই শংকর চক্রবর্তী ভোগদখল করছেন। সেই জমি নিয়ে শনিবার বিকেলে কথা বলতে গেলে তার সাথে থাকা লোকজনদের হাতাহাতি হয়েছে। তবে স্থানীয়রা বলছে, গতকাল শনিবারই প্রথম নয়, এর পূর্বেও মনীষা চক্রবর্তী উল্লেখিত জমিতে লোকজন নিয়ে হানা দেন এবং গাছপালা কাটাসহ ঘেরের মাছ ধরে নিয়ে যান।
চাচাতো ভাই শংকর চক্রবর্তী অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাদের জমিতে রিয়াজ খান নামের এক যুবক গতকাল শনিবার চাষ করছিলেন এমন সময় মনীষা ৮ থেকে ১০ জনের একটি ক্যাডার বাহিনী নিয়ে সেখানে হানা দেন এবং কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই হামলা চালিয়েছেন। এবং রিয়াজ নামের ওই যুবককে পিটিয়ে আহত করেন এবং তিনি জমির কাগজপত্র দেখতে চাইলে তা প্রদর্শন করলে হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলেন। শংকর চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, মনীষা যে ভূমির ওয়ারিশ দাবি করছেন, সেটি মূলত তার (শংকর চক্রবর্তী) বাবা মৃত গৌরঙ্গ চক্রবর্তীর ক্রয় করা। এনিয়ে ইতিপূর্বে কয়েক দফা স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক হলেও তা মানেননি মনীষা। বরং তিনি বিভিন্ন সময়ে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে সেখানে হানা দিয়ে বহুমুখী সন্ত্রাস সৃষ্টি করেন, করছেন।
অভিযোগ, শনিবার মারধর ঘটনার পর মনীষা চাষি রিয়াজ খানের ট্রাক্টর শ্যামপুর বাজারে নিয়ে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। তবে মনীষার দাবি, পৈত্রিক সূত্রে উল্লেখিত জমির ওয়ারিশ তিনিও। কিন্তু জমিটি তার চাচাতো ভাই শংকর চক্রবর্তী তা ভোগ করে আসছেন। তবে এই জমিতে গৌরঙ্গ চক্রবর্তী ব্যক্তিগত ভাবে ক্রয় করছেন শংকরের এমন দাবির বরাত দিয়ে জানতে চাইলে মনীষা বলেন, না, এই জমিটিও তার পূর্বপুরুষদের। কিন্তু আত্মসাৎ করতে শংকর কৌশল নিয়েছেন। বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আলাউদ্দিন মিলন বলেন, এই সংক্রান্তে শংকর চক্রবর্তীর অভিযোগটি একজন অফিসারকে তদন্তে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি আপাতত নির্বাচনী ডিউটিতিতে ব্যস্ত রয়েছেন। পরবর্তীতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’