আততায়ীদের হাতে নিহত, বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার ৩নং জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের স্বনামধন্য চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং রাজনৈতিক অভিভাবক জননেতা আলহাজ্ব আবদুল হাসনাত আবদুল্লাহ’এর আস্থাভাজন ও ভ্যান গার্ড বাবু বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু’র ২য় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে ‘২১ সেপ্টেম্বর’ সোমবার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্যোগে স্মরণ সভা ও প্রার্থনা অনুষ্ঠান- ২০২০ এর আয়োজন করা হয়।
এসময়ে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা স্মরণে প্রয়াত চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু’র সামাধীতে পুষ্প স্তবক অর্পন করেন, সন্তান হারা এক বৃদ্ধা মা, পুত্রের লাশ কাঁধে বয়ে নেওয়া পাথর পিতা, পিতা হারা সন্তান, ভাই হারা বোন, ভাই হারা ভাই, ‘জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ স্বামী’ হারা স্ত্রী! – এ-সময়ে কান্নায় ভেঙে পরেন সকলে! এরপর দক্ষিণ বাংলার রাজনৈতিক অভিভাবক জননেতা আলহাজ্ব আবদুল হাসনাত আবদুল্লাহ’ এর পক্ষ থকে চেয়ারম্যান নান্টুর সামাধীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন, আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল রইচ সেরনিয়াবাত।
এসময়ে তিনি প্রয়াত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু’র বিদেয়ী আত্মার শান্তি কামনা করে বলেন, ” নান্টু শুধু জল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন না, একজন আর্দশবান মুজিব প্রেমী মানুষ ছিলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত রাখতে সর্বত্র কাজ করেছেন। এ কারনেই দলের হাইকমান্ড থেকে শুরু করে সবাই তাকে ভালোবাসতেন। ধিক্কার! ও কঠোর শাস্তি দাবি করি ওই সব সন্ত্রাসীদের যারা এ নৃশংস হত্যাকান্ড সংঘটিত করেছে। সামাধীতে ফুলের তোড়া দিয়ে শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন উজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সিকদার বাচ্চু।
ভাইস চেয়ারম্যান বাবু অপূর্ব কুমার বাইন রন্টু। এছাড়াও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অংঙ্গ সহযোগী সংগঠন, জল্লা ইউনিয়ন পরিষদ, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগসহ বন্ধুবর সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। স্মরণ সভায় প্রয়াত জনপ্রিয় ও স্বনামধন্য চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু’র পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুকলাল হালদার’ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সিকদার বাচ্চু।
তিনি বলেন, “নান্টু ছিলো আমার সেহ্নভাজন ছোট ভাইয়ের মত, দির্ঘদিন আওয়ামী লীগের আন্দোলন সংগ্রামে এক হয়ে কাজ করেছি। নান্টু জল্লাবাসীর ভালোর জন্য সব সময় ভাবতেন। যেদিন নান্টুকে হত্যা করা হয় ২১ সেপ্টেম্বর সেদিন দুপুরেও এসাথে একটি অনুষ্ঠানে খাবার খেয়েছি, কখনো ভাবতেও পারিনি! সার্থের কারনে এক জন আরেকজনকে এভাবে নৃশংস ভাবে গুলি করে হত্যা করতে পারে? কখনো এমনটা ভাবতে পারি নাই! এবং যারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করি। তিনি আর বলেন, আওয়ামী লীগের আমলেই যদি আওয়ামী লীগ নেতার হত্যার বিচার পেতে বিরম্ভনা পোহাতে হয় তাহলে এর চাইতে দুঃখের বিষয় আর কি হতে পারে?
এসময়ে প্রয়াত চেয়ারম্যান নন্টু’র স্ত্রী জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান বেবী রানী দাস অশ্রু সিক্ত চোখ ও বুক ফাটা কান্নায় ভাঙ্গা কন্ঠে বলেন, “এই ২১ সেপ্টেম্বরে আমি হারিয়েছি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ আমার স্বামীকে! আমার মেয়ে হারিয়েছে তার বাবা’কে! আমার পরিবারটাকে পঙ্গু করে দিয়েছে – সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী শাকিল আহাম্মেদ রাব্বী, মামুন শাহ’সহ ওরা, কি দোষ ছিলো আমার স্বামী চেয়ারম্যান বাবু বিশ্বজিৎ হালদার নান্টুর, ওদের মাদক ব্যবসা নান্টুর কারনে সমস্যা হচ্ছিলো, প্রতিবাদ করেছিলেন নান্টু, তাই বলে এমন ভাবে দাম দিতে হলো আমাদের! দুই বছর হয় নৃশংস ভাবে কাড়ফা বাজারে দিনে দুপুরে আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
কিন্তু এখনও মামলার চার্জ সিট পর্যন্ত দেওয়া হয়নি, অন্য দিকে হত্যা মামলার মোষ্ট ওয়ানটেড আসামি শাকিল আহাম্মেদ রাব্বি জামিনে বের হয়ে ১৫ই আগষ্টের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার পথরোধ করে ও মানঅপমান করে। এছাড়াও বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি ও আমার পরিবার ওই সন্ত্রাসীদের ভয়ে সর্বক্ষণ আতংকিত। তাই আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক জননেতা আলহাজ্ব আবদুল হাসনাত আবদুল্লাহ’ এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চাই। যাতে ওই নৃশংস হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।
এসময়ে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম বাচ্চু, তিনি বলেন, মাদকে আশ্রয় প্রশ্রয় না দেওয়াতেই চেয়ারম্যান নান্টুকে নৃশংস ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। এমন সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাটদের কঠোর বিচার না হলে এমন আরও অনেক ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আমাদের হারাতে হবে।
সেসময়ে আর বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অপূর্ব কুমার বাইন রন্টু, জল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সহ সভাপতি মিজানুর রহমান সুমন, ইউপি সদস্য হরনাথ চৌধুরী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক নির্মল বিশ্বাস, জল্লা আইডিয়াল কলেজের প্রভাষক নিখীল বিশ্বাস, ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা সবুজ হালদার। সেসময়ে উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ইকবাল বেপারী, ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেলাজয় ধর, ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি বুলেট বিশ্বাস, ইউপি সদস্য বাদল বিশ্বাস, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আলিমুজ্জামান, এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নতাকর্মী’সহ জল্লা ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ।