সদ্য বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগ যোগদানকারী নব্য আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদুজ্জামান ঝিলামের জোর পূর্বক বালু ভরাটের প্রতিবাদ করায় নব্য আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদুজ্জামান ঝিলাম ও তার চাচাতো ভাই গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সান্টু ভূইয়ার সন্ত্রাসীরা শনিবার বিকেলে সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ছাত্র সংসদের ভিপি সুমন মোল্লার বাড়ি, স্বশুর বাড়ি ও অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে ছাত্রলীগ দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৭ পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। আহত ৭ পুলিশকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি ঘটলে একজনকে বরিশাল শের ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে দুটি বাড়ি, একটি অফিস ও ২৫টি মটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ছাত্র সংসদের ভিপি সুমন মোল্লা জানান, তার আত্মীয় জনৈক শাহজাহান উত্তর বিজয়পুর মহল্লায় জমি কিনে ফেলে রাখে।
গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির চাচাতো ভাই নব্য আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদুজ্জামান ঝিলাম জোর করে ওই জমিতে বালু ভরাটে বাধ্য করতে শাহজাহানের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। শাহজাহান মাটি ভরাট করতে রাজি না হওয়ায নব্য আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক বিএনপি নেতা ঝিলাম তাকে গালিগালাজ করে হুমকি দেন। আত্মীয় বিষয়টি সুমন মোল্লাকে জানালে সুমন এ নিয়ে ঝিলামের সঙ্গে কথা বলেন । এক পর্যায়ে ঝিলামের সঙ্গে সুমনের বিরোধ তৈরী হয়। ভিপি সুমন মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ঝিলাম শনিবার আমাকে তার টরকীস্থ বাসায় ডেকে পাঠান। আমি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মিলন খলিফাকে নিয়ে ঝিলামের বাসায় যাই। বাসায় ঢুকতেই ঝিলাম দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। আমি ধস্তা ধস্তি করে বাসা থেকে বের হয়ে আসতে চেষ্টা করলে পরে গিয়ে ঝিলাম কিছুটা আহত হন।
ঝিলাম এ ঘটনা তার চাচাতো ভাই ছাত্রলীগ নেতা সান্টু ভুইয়ার কাছে ফোনে জানালে সান্টু ভূইয়ার নেতৃত্বে ৫০ /৬০ সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার গৌরনদী বাসষ্টান্ড অফিসে হামলা চালায়। এ সময় অফিসে থাকা সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সজুনকে পিটিয়ে জখম করে। পরবর্তি সান্টু ভূইয়া ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক লুৎফর মোল্লার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী আমার উত্তর বিজয়পুরস্থ বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। আমার মা মিনারা বেগমকে (৫০) পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে বাড়িতে আগুন দিতে গেলে পুলিশী বাধায় তা ব্যর্থ হয়। পরবর্তি সন্ত্রীদের নিয়ে সান্টু ও লুৎফর আমার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
সুমন মোল্লা আরো অভিযোগ করে বলেন, ঝিলাম ভুইয়া বিএনপির একজন সন্ত্রাসী ও সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপনের একান্ত সহযোগী ছিল। সে তার বালুর ব্যবসা ঠিক রাখতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সান্টু ভূইয়ার হাত ধরে আওয়ামীলীগে যোগ দেয়। আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েই বালু ভরাটের নামে এলাকায় মানুষের ওপর জুলুম শুরু করে। আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে পরের জমি দখল ও জোর করে বালু ভরাটে বাধ্য লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরবর্তি উপজেলা এক আওয়ামীলীগ নেতাকে খুশি করে পৌর আওয়ামীলীগের কার্য নির্বাহী সদস্য পদ বাগিয়ে নেন। নব্য নেতার অত্যাচারে মানুষ অতীষ্ঠ। সুবিধাবাদি নব্য আওয়ামীলীগের নেতা ও তার চাচাতো ভাই সান্টু ভুইয়ার দাপটে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের দূর্দিনের নেতাকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অভিযোগ অস্বীকার করে ঝিলাম ভুইয়া বলেন, আমি বালু ভরাট করতে গেলে সুমন মোল্লা কাজে বাধা দেয়। \
শনিবার বিকেল পোনে তিনটায় ছাত্রলীগ নেতা সুমন মোল্লা আমার বাসায় গিয়ে এ নিয়ে কথা বলেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমার ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আমাকে রক্তাক্ত জখম করে। আমাকে রক্ষায় স্ত্রী শারমিন জাহান (৪০) এগিয়ে এলে তাকেসহ সন্তানদের মারধর করে বাসায় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। স্থানীয়রা জানান, সুমন মোল্লার বাড়িতে হামলা খবর ছড়িয়ে পরলে সুমন মোল্লার সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে পাল্টা হামলা চালায়। এ নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৭ পুলিশসহ ২০জন আহত হয়। সংঘর্ষে ২৫টি মটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সান্টু ভুইযা অভিযোগ করে বলেন, সুমন মোল্লা । চাঁদা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ঝিলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ছরোয়ার বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। তবে ৭ পুলিশ আহত হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।