নাজমুল হক মুন্না : সারাবিশ্ব নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)শে আতঙ্কিত । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ মতে বাংলাদেশও হতে পারে কঠিন বিপর্যয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করণ ও সকলকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে মাঠে রয়েছেন সেনাবাহিনী। বন্ধ করা হয়েছে দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা। কিন্তু তাতে থেমে নেই সাধারন মানুষ। ঢাকা-বরিশাল রুটের সমস্ত লঞ্চ পরিবহন বন্ধ থাকলেও বিকল্প উপায় রাজধানীমুখী বরিশালের সাধারন শ্রমো জিবী মানুষ। সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে ঢাকা যাবার কারন জিজ্ঞেস করলে, তারা বলেন আমরা পোশাক শিল্প কারখানার শ্রমিক। আমাদের অফিস খোলা, ঢাকা না গেলে আমরা খাবো কি, আমাদের চাকরি চলে যাবে। শ্রমিকরা জীবনের ঝুকি নিয়ে কেনইবা এত ব্যস্ততা? সরকারের নির্দেশে সকল অফিস আদালত বন্ধ থাকলে কেন প্রশাক শিল্প বন্ধ রাখা হয়নি।
কথা বলে জানা গেছে তাদের অধিকাংশই গার্মেন্টস কর্মী। রোববার ৫ এপ্রিল থেকে তাদের পোশাক কারখানা চালু হচ্ছে। তাই যেতে না পারলে চাকরি থাকবে না এমন শঙ্কায় উন্মাদের মতো ছুটেছে মানুষ। বাবুগঞ্জের রহমতপুর ব্রিজে প্রায় শতাধিক পুরুষের সঙ্গে গাদাগাদি করে পিকআপে ওঠা পোশাক শিল্পের কর্মী রহিমা খাতুন জানান, ‘রোববার ৮ টার মধ্যে কারখানায় উপস্থিত হতে না পারলে চাকরি থাকবে না বলে ফোনে জানিয়েছেন তার গার্মেন্টেসের সুপারভাইজার। লঞ্চ-বাস বন্ধ থাকায় তাই নিরুপায় হয়ে শনিবার পিকআপে রওনা হয়েছেন তিনি।
একাধিক যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এভাবে দাঁড়িয়ে চাপাচাপি করে দুর্ঘটনার আশঙ্কা এবং করোনাভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বরিশাল থেকে মাওয়াঘাট পর্যন্ত যেতেই তাদের গুনতে হচ্ছে গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এছাড়াও ট্রাক বা পিকআপে আদায় করা হচ্ছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। এই টাকার ভাগ যাচ্ছে স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক নেতা এবং পুলিশের পকেটে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস.এম জাহিদ বিন আলম বলেন, ‘জাতির এই সংকটকালীন সময়ে কারা কমিশন বাণিজ্য করছে জানিনা, তবে সবচেয়ে দুঃখের ব্যাপারে হলো-আমরা তাড়িয়ে দিয়ে আসার পরপরই তারা আবার তা শুরু করে। সব জায়গায় সবসময় দাঁড়িয়ে থাকার মতো জনবল পুলিশের নেই। এটাই বাস্তবতা। রহমতপুর ব্রিজ থেকে এভাবে অবৈধভাবে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাওয়া গাড়িগুলো আটকের জন্য গৌরনদী হাইওয়ে পুলিশকে বলা হয়েছে।