• মে ৩০, ২০২৩
  • Last Update এপ্রিল ১, ২০২৩ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • বাংলাদেশ

করোনা সন্দেহে শেবাচিমে ভর্তি- বরিশালে তিনটি বাড়ি লকডাউনে

করোনা সন্দেহে শেবাচিমে ভর্তি- বরিশালে তিনটি বাড়ি লকডাউনে

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার এক ব্যক্তিকে (৪২) সোমবার রাতে শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই ব্যক্তির বাড়িসহ পাশের তিনটি বাড়ির সকল সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুবাস সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, গত কয়েকদিন যাবৎ বাবুগঞ্জ বন্দর এলাকার ভাড়াটিয়া ৪২ বছর বয়সের ওই ব্যক্তি কাঁশি, জ্বর, গলা ব্যাথাসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ নিয়ে গোপনে অবস্থান করছিলেন। এমন সংবাদ জানাজানি হলে রবিবার রাত থেকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে ওই ব্যক্তি আত্মগোপন করেন।

তিনি আরও জানান, সোমবার সন্ধ্যায় তিনি খবর পেয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক নাহিদ হোসেন ও বাবুগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমানকে ওই বাড়িতে পাঠান। পরবর্তীতে তারা ওই এলাকায় গিয়ে তিন বাড়ির তিন জনের করোনার উপসর্গ লক্ষণীয় থাকায় তাদের আগামী ১৪দিন বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়া পলাতক ব্যক্তিকে সোমবার রাতে খুঁজে বের করে শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।

ডাঃ সুবাস সরকার বলেন, মেডিক্যালে ভর্তিকৃত ব্যক্তির অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ পাওয়া গেছে। তবে পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলা যাচ্ছেনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নুসরাত জাহান খান জানান, খবরটি জানার সাথে সাথে ওই এলাকার তিনটি বাড়ির সদস্যদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ পাওয়ায় প্রাথমিক অবস্থায় তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এতে আতঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ওই এলাকায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

করোনা সন্দেহে মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ \ জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকস্টে আক্রান্ত হয়ে বরিশালে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া চারজনের তিনজন নারী ও একজন পুরুষ। তিন নারীর বয়স যথাক্রমে ৪৫, ৬০ ও ৬১। মৃত পুরুষের বয়স ৪০ বছর। মারা যাওয়া তিন নারীর বাড়ি বরিশালে। পুরুষের বাড়ি পটুয়াখালী। চারজনই জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। এদেরমধ্যে একজনের (পুরুষ) নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ভর্তির পর শেবাচিমের করোনা ইউনিটে নেয়ার সাথে সাথে নগরীর ৪৫ বছরের এক নারী এবং বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সাকোকাঠী গ্রামে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৬১ ও ৬০ বছরের দুই নারী মারা গেছে। মারা যাওয়া তিন নারীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। ফলে পরিবারের সদস্যরা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তাদের মরদেহ দাফন করেছেন।

বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলেই সে করোনায় আক্রান্ত নয়। তিনি আরও জানান, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিন শেবাচিম হাসপাতালে এসে পৌঁছেছে। তবে প্রয়োজনীয় কিটস এখনও আসেনি। তবে আইইডিসিআর থেকে দু’একদিনের মধ্যে কিটস পাঠানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বরিশালেই করোনার পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হবে। পরীক্ষা শুরু হলে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার সন্দেহভাজন কোন রোগীর নমুনা আর ঢাকায় পাঠানোর প্রয়োজন হবেনা। তিনি আরও বলেন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এখন পাঁচজন রোগি করোনা সন্দেহে ভর্তি রয়েছেন। তবে তারা কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি-না, সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে নিশ্চিত বলা যাচ্ছেনা। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *