• জুন ৮, ২০২৩
  • Last Update এপ্রিল ১, ২০২৩ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • বাংলাদেশ

অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে ট্রেন দূ’র্ঘটনায় নি’হত হবিগঞ্জের আল আমীনের স্ত্রী-সন্তানেরা

অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে ট্রেন দূ’র্ঘটনায় নি’হত হবিগঞ্জের আল আমীনের স্ত্রী-সন্তানেরা

এক মাস বয়সি এক নবজাতকসহ তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দূ’র্ঘটনায় নি’হত আল আমীনের স্ত্রী। অনাহার-অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন। জে’লা প্রশাসন থেকে পাওয়া ১৫ হাজার টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রতিবেশিদের দয়ার উপর নির্ভর করে বেচে আছেন ৪ সদস্যের এই পরিবারটি। আল আমীন (৩০) হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজে’লার কাগাপাশা ইউনিয়নের গুণই গ্রামের আয়ুব হোসেনের ছেলে।

তিন সন্তানের জনক আল আমীন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। দুটি শিশু কন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে অভাব-অনটনে দিন কাটে তার। পৈত্রিক সম্পত্তি বলতে একটি বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। তার বাবা এখনও জীবিত থাকলেও অন্য এক নারীর সাথে অন্যত্র সংসার করছেন। এলাকায় কাজ না থাকায় অভাবের তাড়নায় আল আমীন চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। তার ৯ বছর ও ৬ বছর বয়সি দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

দূ’র্ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে আল আমীনের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। তাকে দেখা জন্য আল আমীন চট্টগ্রাম থেকে গ্রামের বাড়ি বানিয়াচং আসেন। সেখানে সপ্তাহখানেক থাকার পর ফের তিনি কর্মস্থলে রওনা দেন। ১২ নভেম্বর দূ’র্ঘটনার রাত সাড়ে ১২টায় শায়েস্তাগঞ্জ থেকে ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ওঠেন আল আমীন। রাত ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ভয়াবহ ট্রেন দূ’র্ঘটনায় তিনি নি’হত হন। সকালে বাড়িতে তার মৃ’ত্যুর খবর পৌঁছলে শো’কে স্তব্ধ হয়ে যায় চারপাশ। আল আমীনের বাড়িতে চলে শো’কের মাতম।

এদিকে, তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নি’হত আল আমীনের স্ত্রী ফুলবানু বেগম। অনাহার-অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন। ঘটনার পর হবিগঞ্জ জে’লা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হয় তার পরিবারকে। কিন্তু আর কোথাও থেকে কোন সহযোগিতা পাননি বলে জানান ফুলবানু। এমনকি ঘটনার পর নি’হতের পরিবারকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই টাকা তাদের কাছে আসেনি। ফলে অর্থ সংকটে খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটছে পরিবারটির। এখন প্রতিবেশিদের দেয়া সহযোগিতার উপর নির্ভর করছে তাদের বেচে থাকা।

এ ব্যাপারে আল আমীনের স্ত্রী ফুলবানু বলেন- ‘স্বামী মা’রা যাওয়ার ২০ দিন আগে সিজারের মাধ্যমে আমার একটি পুত্র সন্তান হয়। এখন তিনি মা’রা যাওয়ার কারণে দুই অবুজ মেয়ের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছি না। খাবারের জন্য বাচ্চা দুটি কান্না-কাটি করে। এলাকার লোকজন মাঝে মধ্যে চাল-ডাল দেন। এগুলো দিয়েই দুই বাচ্চার মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দেই।’ তিনি বলেন- ‘তিনি (আল আমীন) মা’রা যাওয়ার পর ১৫ হাজার টাকা পাইছিলাম। এগুলো উনার দাফন-কাপনেই শেষ হয়ে গেছে। সরকার থেকে আর কোন সহযোগিতা পাইনি। এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজে’লা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন খন্দকার বলেন- ‘জে’লা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে ১৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। আরও সহযোগিতার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া মন্ত্রী মহোদয়ের ঘোষণাকৃত টাকা এখনও আসেনি। আমরা নি’হতদের যাবতীয় তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় থেকে টাকা পাঠালেই তাদেরকে দেয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *