• মে ৩০, ২০২৩
  • Last Update এপ্রিল ১, ২০২৩ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • বাংলাদেশ

একযুগ ধরে শিকল বন্দি মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক লিখন হাওলদার

একযুগ ধরে শিকল বন্দি মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক লিখন হাওলদার

অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে একমাত্র ছেলের মৃত্যু দাবি করলেন গর্ভধারীনি মা

প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাড়ি ও প্রতিবেশিদের ওপর একাধিকবার হামলা চালিয়েছে লিখন হাওলাদার। তার দিনমজুর পিতা একমাত্র ছেলেকে সুস্থ্য করার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শুরু করে পাবনার মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বস্ত্র খুঁইয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
ফলে গত এক যুগ ধরে একটি অন্ধকার ঘরে শিকল বন্দি করে রাখা হয়েছে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চেঙ্গুটিয়া গ্রামের শাহজাহান হাওলাদারের একমাত্র পুত্র লিখন হাওলাদারকে (৩৪)। গত রমজানের শুরুতে দিনমজুর শাহজাহান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এখন শষ্যাশয়ী অবস্থায় রয়েছেন। অর্থাভাবে তারও সঠিক চিকিৎসা হচ্ছেনা। এ অবস্থায় বাবা ও ছেলের চিকিৎসাতো দূরের কথা বর্তমানে তাদের পরিবারে তিন বেলা আহারও জুটছেনা। বাবা ও ছেলের সু-চিকিৎসার জন্য এলাকাবাসী মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সূত্রমতে, একমাত্র পুত্র লিখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এক যুগ ধরে শিকল বন্দি অপরদিকে স্বামী শষ্যাশয়ী থাকায় চরম বিপাকে পরেছেন শাহজাহানের বৃদ্ধ স্ত্রী রোকেয়া বেগম। অতিষ্ঠ হয়ে তিনি বলেন, লিখনের কস্ট আর সহ্য করতে পারছিনা। একটি অন্ধকার ঘরের মধ্যেই শিকল বন্দি অবস্থায় ওর (লিখন) থাকা, খাওয়া ও বাথরুম করতে হয়। ওর কস্ট দেখে অনেকবার শিকল খুলে দেয়ার পর বাড়ির ও প্রতিবেশিদের মারধর করায় আবার লিখনকে শিকল বন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অনেকবার ওর ঘর পরিস্কার করতে যাওয়ার পর আমাকে মারধর করেছে। অর্থাভাবে কোন উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছিনা। নিজের চোখের সামনে সন্তানের এ করুন দৃশ্য আর দেখতে পারছিনা। এরচেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে একমাত্র ছেলের মৃত্যুর দাবিও করেছি।

রোকেয়া বেগম বলেন, বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি মেয়ের সাথে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে লিখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। একমাত্র পুত্রের চিকিৎসার জন্য সে সময় ওর বাবা (দিনমজুর শাহজাহান) নিজের সহয় সম্পত্তি বিক্রি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সর্বশেষ পাবনার মানসিক হাসপাতালেও চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তিনি বলেন, একমাত্র পুত্রের দুচিন্তায় গত রমজান মাসের শুরুতে তার দিনমজুর স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিনাচিকিৎসায় এখন শষ্যাশয়ী অবস্থায় রয়েছেন। অর্থাভাবে তারও সঠিক চিকিৎসা হচ্ছেনা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *