• জুন ৮, ২০২৩
  • Last Update এপ্রিল ১, ২০২৩ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • বাংলাদেশ

কর্জ বা ঋণ হক্কুল ইবাদ

কর্জ বা ঋণ হক্কুল ইবাদ

বোখারি শরিফের হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ইসলামের প্রথম যুগে জানাজা উপস্থিত করলে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাজার নামাজ শুরু করার আগে উপস্থিত সাহাবায়ে কেরামকে জিজ্ঞাসা করতেন, তার কি কর্জ আছে? যদি জবাবে বলা হতো হ্যাঁ, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সরে যেতেন এবং বলতেন, তোমাদের একজন এই জানাজার ইমামতি কর। এখান থেকে প্রতীয়মান, জানাজা পড়তেই হবে। তবে প্রশ্ন হয়, নবীজি কেন পড়ালেন না। এর উত্তর হলো, কর্জ একটি মারাত্দক বিষয়। আমার যদি কিছু নামাজ কাজা হয়ে থাকে, আমি সেগুলো আস্তে আস্তে আদায় করতে শুরু করি, আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকি, এরপর আদায় করে শেষ করতে না পারি, আর এ অবস্থায় আমার মৃত্যু হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশা করতে পারি। কিন্তু যদি আমি কারও কাছ থেকে ১০ টাকা কর্জ করলাম, আদায় করলাম না। কিংবা কর্জদাতার কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিলাম না কিংবা সে আমাকে ক্ষমা করল না, তাহলে উপায় নেই। আল্লাহপাকও ক্ষমা করবেন না। আল্লাহপাক বলবেন, তুমি যার কাছ থেকে কর্জ করেছ, তার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করতে পারব না। দুঃখজনক কথা হলো জীবনভর ইমামতি করলাম, আমার হাজার হাজার মুসল্লি দলে দলে জান্নাতে চলে যাবে, কিন্তু আমি মুসল্লিদের কাছ থেকে কর্জ করে তা পরিশোধ করলাম না। আমাকে হুজুর মনে করে জাকাতের টাকা প্রদান করল, আর আমি অপচয় করলাম, এ সব কারণে আমি আটকা পড়ে যাব। কর্জ অত্যন্ত মারাত্দক বিষয়। এটা বোঝানোর জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জানাজার নামাজ পড়াতেন না। তবে রসুলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাজার পাশে দাঁড়িয়ে আরেকটি কথা বলতেন; তা হলো, ‘তোমাদের মধ্যে কী এমন কেউ আছে, যে এই মাইয়্যেতের ঋণ পরিশোধ করে দেবে? তখন যদি কেউ ঋণ পরিশোধের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতেন, তাহলে নবীজি জানাজা পড়াতেন। পরবর্তীতে যখন বায়তুল মালের ব্যবস্থা হয়, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাজার সামনে দাঁড়িয়ে বলতেন, তোমাদের কেউ যদি এই মাইয়্যেতের কাছে পাওনাদার থাক, তাহলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিয়ে নেবে। এ ঘোষণা দিয়ে নবীজি নিজেই জানাজা পড়াতেন।

মাওলানা মাহমূদুল হাসান

খতীব, গুলশান সেন্ট্রাল আজাদ মসজিদ
প্রিন্সিপ্যাল ও শায়খুল হাদীস, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *