• মার্চ ২৮, ২০২৩
  • Last Update ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩ ৯:১৫ অপরাহ্ণ
  • বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানিবৃদ্ধি, ভাঙ্গন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানিবৃদ্ধি, ভাঙ্গন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সেলিম রেজা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির কারনে সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। প্রতিদিনই যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে অভ্যান্তরীন নদ নদী গুলোতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারনে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে। যমুনা নদীতে অবৈধ আর অপরিকল্পিত বালি উত্তোলনের কারনে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে দুই এক দিনের মধ্যে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করবে। পানি বৃদ্ধির কারনে ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। অব্যাহত ভাঙ্গনে বাঐখোলা বাঁধ সহ বিলীন হচ্ছে বিস্মৃন্ন জনপথ। ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না থাকায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে নদী পাড়ের ৮ গ্রামের মানুষের। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড দাবী করেছেন ভাঙ্গন রোধে বালির বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে। যমুনা নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে কাজীপুর উপজেলার বাহুকা, সিংড়াবাড়ি, বাঐখোলা ও পাটগ্রাম এলাকা। প্রতিদিন ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে বাঐখোলা বাঁধসহ এসব এলাকার বিস্মৃন্ন জনপথ। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় হুমকীর মধ্যে রয়েছে গান্দাইল, রতনকান্দি ও শুভগাছা ইউনিয়নের বাহুকা, বাঐখোলা, পূর্ব খুশকিয়া, পাটাগ্রাম, কুড়ালিয়া, সিংড়াবাড়ি, চিলগাছাসহ নদীতীরবর্তী ৮ গ্রামের লাখো মানুষ। অব্যাহত ভাঙ্গনে এসব এলাকার ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় বাঐখোলা বাঁধের অর্ধকিলোমিটার সহ অর্ধশত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন রোধে কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে প্রত্যশা নদী পাড়ের মানুষের। এদিকে এনায়েতপুর, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলাতেও ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। যমুনা নদীর পাশাপাশি অভ্যান্তরীন নদ নদী গুলোতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত কয়েক দিনে বাঐখোলা বাঁধের প্রায় অর্ধকিলোমিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করেছি। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। যে কারনে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ওমর আলী বলেন, যমুনা নদীতে পানি বাড়ার পাশাপাশি ভাঙ্গন শুরু হয়। গত কয়েক দিনে বাঐখোলা, শুভগাছা গুচ্ছগ্রাম, পাটগ্রাম, পূর্ব খুকশিয়া গ্রামে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়। ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমি, বেশকিছু বৈদ্যুতিক খুটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষ বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ভারতের আসামে প্রবল বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারনে যমুনা নদীর উজানে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে ভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে দু এক দিনের মধ্যে যমুনা নদীর পানি বীপদসীমা অতিক্রম করবে। বাঐখোলা বাঁধ রক্ষায় বালির বস্তা ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ২ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষন কাজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজের ওয়ার্কঅর্ডার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। পানি কমলে কাজ শুরু হবে। আগামী বছর গুলোতে আর ভাঙ্গন থাকবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিত ভাবে বালি উত্তোলন ভাঙ্গনের কারন হতে পারে। ৮০/৮৫ কিলোমিটার নদী পথ আছে তার মধ্যে দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ৩৫ কিলোমিটার নদী ভাঙ্গন রোধ করে ফেলেছি। এই মুহুর্তে আমাদের দুটি প্রকল্প চলমান আছে। এছাড়া কাজীপুরের বাঐখোলা, খুদবান্দি এবং এনায়েতপুরের ব্রক্ষনগাতী, হাটপাচিল এলাকায় ভাঙ্গন রয়েছে। এখানে ভাঙ্গন রোধে প্রকল্প তৈরী করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। এগুলো অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *