• মে ২৯, ২০২৩
  • Last Update এপ্রিল ১, ২০২৩ ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • বাংলাদেশ

ঈদের আনন্দ শেষে শুরু হলো কর্মস্থলে ফেরার পালা

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ স্বজনদের সাথে ঈদ-উল ফিতরের আনন্দ উপভোগ শেষে এবার শুরু হয়েছে কর্মে ফেরার পালা। কর্ম এবং পেটের তাগিদে ঈদের চতুর্থ দিন (শনিবার) লঞ্চ ও বাসযোগে বরিশাল ছাড়ছেন হাজার হাজার মানুষ। যদিও ঝক্কিঝামেলা এড়াতে তাদের কর্মে ফেরার যুদ্ধ শুরু হয় ঈদের তৃতীয় দিন অর্থাৎ ৭ জুন থেকেই। তবে শনিবার নদী বন্দর ও বাস টার্মিনালে পূর্বের দিনের তুলনায় যাত্রীদের ভীড় ছিলো বেশি।
বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে চলাচলকারী লঞ্চ মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, ঈদ-উল ফিতরে স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে শেখরের টানে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বরিশালে আসেন ১২ লক্ষাধিক মানুষ। ঈদ আনন্দ উপভোগ করে তারা আবার কর্মের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন। তবে পূর্বের ঈদগুলোতে একটু আগেভাগেই যাত্রীদের ভিড় ছিলো লক্ষনীয়। এবার ছুটি একটু বেশি হওয়ায় এখন পর্যন্ত সে রকমের ভীড় বাড়েনি।
বরিশাল নদী বন্দরে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রার অপেক্ষায় থাকা গাজীপুরের গার্মেন্টস সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন জানান, আজ রবিবার ছুটি শেষ হচ্ছে। তাই আগে ভাগেই বরিশাল থেকে চলে যেতে হচ্ছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স এর ছাত্র জসিম উদ্দিন শান্ত বলেন, স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ করেছি। এখন লেখা-পড়ায় মনযোগি হতে হবে। তাছাড়া ঢাকায় বন্ধুরা রয়েছে। ওদের সাথেও একটাদিন ব্যয় করতে চাই। তাই একটু আগেভাগেই বরিশাল ত্যাগ করছি।
বরিশাল সদর নৌ-থানার ওসি মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন জনকণ্ঠকে জানান, ঈদের তৃতীয় দিনের চেয়ে শনিবার একটু ভীড় বেশি ছিলো। তবে তা তুলনামুলক নয়। কর্মে ফেরা যাত্রীদের নিরাপত্তায় নৌ-বন্দরে নৌ পুলিশের পাশাপাশি মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের পাশাপাশি যাত্রীদের সহযোগিতা ও বন্দরের শৃঙ্খলা রক্ষায় ক্যাডেট ও স্কাউট সদস্যরা কাজ করছে।
অপরদিকে বরিশাল নৌ বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদের পরেরদিন থেকেই কর্মে ফেরা মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছে। ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয়দিন অর্থাৎ ৬ ও ৭ জুন বরিশাল থেকে ছয়টি করে লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। তবে ওই দুইদিন যাত্রীদের তেমন চাঁপ ছিলোনা। তিনি আরও বলেন, শনিবার নদী বন্দরে যাত্রীদের চাঁপ পূর্বের দিনের থেকে অনেক বেশি। সে অনুযায়ী নদী বন্দরের জেটিতে ১৩টি বেসরকারী লঞ্চ বার্দিং করা রয়েছে। এরমধ্যে ১০টি লঞ্চে যাত্রী তোলা হচ্ছে। ওই ১০টি লঞ্চ বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। তবে যাত্রীদের চাঁপ বেশি হলে বাকি তিনটি লঞ্চও যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। এরপূর্বে দিবা সার্ভিসের দুটি ক্যাটামেরন টাইপের দুটি নৌ-যান যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। তাছাড়া নদী বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি লঞ্চই সদর ঘাটে যাত্রী নামিয়ে পুনরায় বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসছে।
আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, ঈদ উপলক্ষে নৌ-বন্দরে বিআইডব্লিউটিএ ১৪দিনব্যাপী সেবাপক্য পালন করছে। যার কারনে বন্দরে যাত্রীদের কোন ভোগান্তি নেই। তবে ভোগান্তি একটাই, তা হলো পল্টুন সংকট। পল্টুনের অভাবে একটি লঞ্চের পেছনে আরেকটি লঞ্চ বার্দিং করতে হচ্ছে। যাত্রীরাও এক লঞ্চ থেকে ঝুঁকি নিয়ে অপর লঞ্চে উঠছে।
শুধুমাত্র লঞ্চেই নয়, কর্মে ফেরা যাত্রীদের ভীড় বাড়ছে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও। জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শনিবার সকাল থেকে শতাধিক পরিবহন ঈদ ফেরত যাত্রী নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে।

Related Articles