স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল :- আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বরিশালের দশটি উপজেলার সম্ভ্রাব্য চেয়ারম্যান, পুরুষ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র জমা নিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা। গত তিনদিনে দশ উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক সম্ভ্রাব্য চেয়ারম্যান, পুরুষ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নৌকা পেতে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান প্রার্থীদের আবেদনপত্রের সাথে অফেরতযোগ্য নগদ দশ হাজার টাকা ও ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থীদের কাছ থেকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা করে জমা নেয়া হয়েছে। প্রার্থীদের আবেদনপত্র পর্যালোচনা করে কেন্দ্রের কাছে তিনজনের নাম সুপারিশ আকারে পাঠানো হবে। কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। সূত্রে আরও জানা গেছে, গত তিনদিনে জেলার দশটি উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক সম্ভ্রাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর আবেদনপত্র জমা পরেছে।
এরমধ্যে জেলার উজিরপুর উপজেলায় আটজন চেয়ারম্যান প্রার্থী, তিনজন পুরুষ ভাইসচেয়ারম্যান ও তিনজন নারী ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থী আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নৌকা পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীরা হলেন-বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএস জামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন-অর রশিদ, ওটরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল খালেক রাঢ়ী, ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহাদাত হোসেন, সাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আজাদ, শোলক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ কাজী হুমায়ুন কবির। এরমধ্যে তৃণমূলের পছন্দের তালিকায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু। সম্ভ্রাব্য ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান অপূর্ব কুমার বাইন রন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অশোক কুমার হালদার, আওয়ামী লীগ নেতা আতাহার আলী। নারী ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী শীল, নারী নেত্রী বিউটি খানম।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গৌরনদী উপজেলার সম্ভ্রাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী নৌকা প্রতীক পেতে পাঁচ প্রার্থী আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। এরা হলেন-বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শিল্পপতি আলহাজ্ব মোঃ নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীন নেতা এইচএম জয়নাল আবেদীন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন মিয়া, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান। এরমধ্যে তৃণমূলের জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন আলহাজ্ব মোঃ নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী। তিনি (ফরহাদ মুন্সী) ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজস্ব তহবিল থেকে শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ড, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, দারিদ্রদের আর্থিক সহযোগিতাসহ সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে সর্বস্তরের জনসাধারণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। এবার তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন পুরো উপজেলাবাসী।
পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার জন্য নয়জন প্রার্থী আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন-আওয়ামী যুবলীগের উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী অমানুষিক নির্যাতনের শিকার ত্যাগী নেতা মোঃ এমদাদ হোসেন হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক কামরুল ইসলাম দিলীপ, ত্যাগী ও নির্যাতিত আওয়ামী লীগ নেতা প্রনব রঞ্জন দত্ত বাবু, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন খান, আওয়ামী লীগ নেতা জামাল হোসেন বাচ্চু, ফারুক বেপারী, হাফেজ নুরুল হক, মোঃ মামুন মোল্লা, বুলবুল দেওয়ান। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবেদন জমা দিয়েছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট সাহিদা আক্তার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির মিয়ার স্ত্রী জিনিয়া আফরোজ হেলেন, বার্থী ইউনিয়নের সাবেক সদস্য শিপ্রা রানী বিশ্বাস ও জেলা ছাত্রলীগ নেত্রী শারমিন কবির বিথী।
মুলাদী উপজেলায় পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। এরমধ্যে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারিকুল হাসান মিঠু খান ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ-সম্পাদক জহির উদ্দিন খসরু।
তারিকুল হাসান মিঠু খান ছাত্রজীবনে মুলাদী ডিগ্রি কলেজের নির্বাচিত সাবেক জিএস ছিলেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক মাঠে তার অগ্রনী ভূমিকার ফলে পর্যায়ক্রমে তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক, বর্তমানে উপজেলা ১৪ দলের সমন্বয়ক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
তারিকুল হাসান মিঠু খান বলেন, আমার জীবনের পুরোটা সময় কেটেছে একসময়ের বিএনপি অধ্যুষিত নদী বেষ্টিত মুলাদী উপজেলায়। বর্তমানে পুরো মুলাদীতে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক হিসেবে তৈরি করেছি। আমি পাঁচ বছর এ উপজেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে কাজ করেছি। নির্বাচিত হয়ে সমস্যা চিহ্নিত করতে আরও বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে গিয়েই সময় কেটে গেছে। তাই আমার অসমাপ্ত উন্নয়ন সম্পন্ন করতে আরও পাঁচটি বছর প্রয়োজন। জনগণের প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। তারা আমাকে ফের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে এলাকার উন্নয়নের সুযোগ দেবেন। পাশাপাশি চেয়ারম্যান হিসেবে দক্ষতা ও সুনামের সাথে কাজ করে জনগনের আস্থা অর্জন করেছি। তাই মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি আমাকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিলে আমি তাদের মর্যাদা রক্ষা করবো।
উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আব্দুল মালেক মাস্টারের পুত্র জহির উদ্দিন খসরু শিক্ষানুরাগী হিসেবে উপজেলার সর্বত্র তার সুনাম রয়েছে। তিনি বাটামারা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আলিমাবাদ দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নৌকার প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তরুন সমাজ সেবক জহির উদ্দিন খসরু বলেন, উপজেলার সর্বস্তরের ভোটাররা চাচ্ছেন আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে। ইনশাআল্লাহ আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক দেয়া হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মাদকমুক্ত উপজেলা ও যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য যথাযথ ব্যাবস্থা করাই হবে আমার প্রথম কাজ হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলা, বাকেরগঞ্জ, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, আগৈলঝাড়া ও বানারীপাড়া উপজেলায়ও বর্তমান ও নতুন অসংখ্য সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা নৌকা পেতে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, এখানকার ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সানিধ্য পেতে কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতিটি উপজেলায় অসংখ্য প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহত সংগঠন তাই দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে প্রার্থী বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ লবিং কিংবা তদবির বাণিজ্য করেনা। যার যোগ্যতা আছে তাকেই মনোনয়ন দেবে দলীয় ফোরাম।
সংবাদ শিরোনাম
- অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে ইউপি সদস্যকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
- তাড়াশে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লকে নির্মাণ কাজে অনিয়ম
- সিরাজগঞ্জ র্যাব-১২ ব্যাটালিয়নের এনজিও প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা সভা
- সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ায় সুদ ব্যবসার আড়ালে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের প্রধান আসামি গ্রেফতার
- এ্যাবজার সাধারণ সভা ২৬ আগস্ট
- চৌহালীর যমুনায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তলনের দায়ে ৮ জনকে আটক
- তাড়াশে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ ছাত্র নিহত
- শাহজাদপুরে বেড়াতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১জন নিহত
- মনির হোসেন মনি’র মৃত্যুর ঘটনার আসল বের করলো সিরাজগঞ্জ পিবিআই
- সিরাজগঞ্জে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকারের অভিযান